শরীয়তপুর ইসলামি যুব সোসাইটি
আর্তমানবতার সেবায় সমর্পিত অরাজনৈতিক, অলাভজনক, অসাম্প্রদায়িক, অবানিজ্যিক, শিক্ষা-সেবা- দাওয়াহ ও পূর্ণত সমাজ কল্যাণমূলক একটি সংগঠন। ২০২০ সালের ৪ ই ফেব্রুয়ারী শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানাধীন কাঁচিকাটা ইউনিয়নের উত্তর মাথাভাঙ্গা গ্রামের আব্দুশ সোবহান বেপারীর সর্বকনিষ্ঠ সন্তান মোঃ রহমত উল্লাহর উদ্যোগে কাঁচিকাটা ইউনিয়নের কতিপয় যুবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিক্ষা- সেবা- দাওয়াহ কার্যক্রম বাস্তবায়নে "ইসলামি যুব পরিষদ" নামে এই সমাজ সেবামূলক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে "শরীয়তপুর ইসলামী যুব সোসাইটি" নামকরণ করা হয় এবং ২০২৫ সালের মে মাসের ২৮ তারিখে এই সংগঠনটি RJSCর অধীনে সরকারি নিবন্ধন লাভ করে। ইসলাম সমর্থিত সকল প্রকার সমাজ সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করা, ইসলাম শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়ারী শিক্ষার সমন্বয়ে একটি শিক্ষিত, কুসংস্কার মুক্ত আত্মনির্ভরশীল প্রজন্ম এবং মাদকমুক্ত একটি যুবসমাজ তৈরি করাই এই সংগঠনটির স্বপ্ন। এই সংস্থাটি মানবতার শিক্ষক, মানুষের মুক্তি ও শান্তির দূত, মানবসেবার আদর্শ, মহানবী মুহাম্মদ সা.-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আর্তমানবতার সেবা, সমাজ-সংস্কার, মহোত্তম নীতিচেতনার সঞ্চার, পরিচ্ছন্ন মানসিকতা গঠনে নিরন্তর নানা কর্মসূচি পালন, সর্বোপরি একটি আদর্শ কল্যাণমূলক সমাজ তথা দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে ইনশাল্লাহ।
নীতি ও আদর্শ
শিরকমুক্ত ঈমান ও বিদ'আতমুক্ত আমলের প্রতি আহ্বান করা। শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে সমাজে চলমান নানা রকম ভ্রান্ত বিশ্বাস এবং কুসংস্কার দূর করে একটি ন্যায়-নীতি পূর্ণ আদর্শ সমাজ গঠন করা।
রাজনৈতিক কর্ম ও অবস্থান গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং দলমত নির্বিশেষে সকলের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করে যাওয়া।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১। দ্বীন এবং দুনিয়াবী শিক্ষার সমন্বয়ে উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
২। অশিক্ষিত ও স্বল্পশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে উন্নত পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণমূলক শিক্ষাকার্যক্রম চালু করা।
৩। দ্বীন এবং দুনিয়াবী জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বাজারে ও জনবহুল এলাকায় পাঠাগার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকলের জন্য জ্ঞান অর্জনের দ্বার উন্মুক্ত করা।
৪। সমাজে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার অপসংস্কৃতি দূর করে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চালু করা।
৫। সমাজে চলমান হানাহানি, মারামারি, হিংসা ও বিদ্বেষ দূর করে একটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন করা।
৬। সমাজে চলমান নানা ধরনের ভ্রান্ত বিশ্বাস ও কুসংস্কার দূর করে ন্যায়নীতি ও আদর্শে পরিপূর্ণ একটি সমাজ গঠন করা।
৭। যুব সমাজকে মাদকাসক্তির অন্ধকার থেকে বের করে নৈতিক ও মানসিকভাবে সুগঠিত করে গড়ে তোলা।
সর্বোপরি ন্যায় নীতি ভিত্তিক একটি আদর্শ পরিবার, সমাজ এবং দেশ গঠন করা।
কার্যক্রম
১। দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ইফতার সামগ্রী, ঈদ সামগ্রী ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা। ২। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা। ৩। বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচি পালন করা। ৪।গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের বই-পুস্তক ও লিফটের বিতরণ এবং সভা/সেমিনারের আয়োজন করা। ৫। কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক ইসলামের দাওয়াত প্রচার করা। ৬। মাদ্রাসা/স্কুল শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং পুরস্কার/সম্মানা প্রদান করা।
৭। মসজিদ, মাদ্রাসা/স্কুল এবং কবরস্থান সম্প্রসারণে সহায়তা প্রদান করা। ৮।দরিদ্র মানুষের মধ্যে যে কোন প্রকার জনহিতকর বা দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৯। সমাজ থেকে মাদক ও সকল ধরনের অন্যায় দূরীকরণে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
তহবিল ও আয়ের এর উৎস
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যগণের দানের অর্থ ও তহবিল দিয়ে যাত্রা শুরু।
সদস্যদের ভর্তি ফি, চাঁদা/অনুদান ও দান
সদস্য, সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের এককালীন ও নিয়মিত অনুদান।
ফাউন্ডেশনর যে কোন প্রকল্প থেকে অর্জিত হয়।
জনসাধারণ কর্তৃক বিশেষ কোনো খাতে প্রদত্ত অনুদান।
সচ্ছল মুসলিমদের প্রদেয় যাকাত, ফিতরা।
ইফতার ও কুরবানীসহ বিশেষ বিশেষ খাতে উসুলকৃত অর্থ।
সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, কল্যাণমূলক ফাউন্ডেশনের, দেশী-বিদেশী দাতা সংস্থার দান, অনুদান।
অর্জনসমূহ
২০২০, ২০২১ এবং ২০২৫ সালে প্রায় ৪৪০ পরিবার এবং ১০৩ জন মসজিদের ইমামের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ । ২০২১,২০২২ এবং ২০২৩ সালে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লী এবং সাধারণ মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। ২০২২ এবং ২০২৩ সালে প্রায় তিন শতাধিক ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রোপন। ২০২০,২০২১, ২০২২ এবং ২০২৪ সালে প্রায় ৪ শতাধিক পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ । ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ২৫ জন ব্যক্তিকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান। ২০২১ সালে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কুরআনুল কারীম উপহার দেওয়া হয়। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান। ২০২২ সালে অসহায় মহিলা খোদেজা বেগমকে টিন কাঠের ঘর নির্মাণ। ২০২২ সালে মক্তব শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাদিস ও দোয়ার বই বিতরণ। ২০২৫ সালের মে মাসে পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করা হয়। আলহামদুল্লিাহ। উপরে বর্ণিত কার্যক্রমের পাশাপাশি সংস্থাটি আরও নানা ধরনের সমাজকল্যাণমূলক কর্মকান্ড সফলভাবে সম্পাদন করেছে।